অনলাইন ডেস্কঃ উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিচের বিরুদ্ধে অর্থআত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কুপিল উদ্দিন। তার এই অভিযোগ পত্রে সহমত দিয়ে ইদ্রিচ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে স্বাক্ষর করেছেন নয়জন ইউপি সদস্য। তারা হলেন-জুঁইদন্ডীর ১নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আবছার উদ্দিন, ২নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. নুরুন্নবী, ৩নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার কপিল উদ্দিন বাবু, ৪নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ফরিদুল আলম মিয়া, ৫নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. রনি চৌধুরী, ৯নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মুফিজ, ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার রুবি আক্তার, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শারমিন হক শেফু, ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার রুবিনা আকতার।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও স্থানীয় সরকার বিভাগ কতৃপক্ষের কাছে এ অভিযোগ পৌঁছেছে। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থ আত্মসাৎ ছাড়াও ইদ্রিচ চেয়ারম্যান দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, জালিয়াতি, অসদাচরণ, পরিষদের নারী সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ, স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারী জেলা চট্টগ্রাম প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন নয়জন ইউপি সদস্য। এর একদিন পর ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় স্থানীয় সরকারের সিনিয়র সচিব বরাবর এ লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করা হয়। এছাড়া ১৮ জানুয়ারি আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও লিখিত অভিযোগটি প্রেরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়নে বিশ্বাসী: আনোয়ারার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে নুরুন্নবী মেম্বার চাটগাঁর সংবাদকে বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এজন্য জনগণ সবসময় আমাদের দিকে চেয়ে থাকে। কিন্তু বণ্টন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ ও স্বজনপ্রীতির কারনে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। কোনো বরাদ্দ এলে ইউপি চেয়ারম্যান তার অনুকূলে রেখে দেন। আমাদের না ডেকে, সমন্বয় না করে তিনি নিজের মতো করে সেগুলো বণ্টন করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে আবছার মেম্বার বলেন, ‘ইউনিয়নে মাসিক কোনো সভা না ডেকে সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে চেয়ারম্যান ও সচিব সমস্ত কাজ পরিচালনা করেন। এমনকি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সহযোগিতায় সরকারি বরাদ্দ ভাগ বাটোয়ারা করা হয়।’
মুফিজ মেম্বার বলেন, ‘অনবরত হয়রানী ও নানা রকম হুমকি দিয়ে আসতেছে। বেতন-ভাতার বিষয়ে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কেউ সাহস করে না।
বাবু মেম্বার বলেন, পরিষদের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও ইউপি সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় না করে নিজের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেন। সরকারের প্রদত্ত সকল প্রকার ভাতা প্রকৃত ভাতাভোগীদের না দিয়ে চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছেমতো তার পছন্দের লোকদের প্রদান করেন।
ফরিদুল আলম মিয়া মেম্বার বলেন, ওয়ারিশ সনদ বাবদ জোর পূর্বক জনগণ
থেকে ৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। ইউনিয়নের জন্য যাবতীয় সরকারী বরাদ্দ তিনি অবলীলায় আত্মসাৎ করেছেন। সরকারের বরাদ্দকৃত ১ শতাংশ প্রকল্পে কাজ কোথায় হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ারম্যান ইদ্রিচের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply